সংরক্ষণ করুন
  • New List
আরও
    সংরক্ষণ করুন
    • New List
1,48315/রজব/1445 , 27/জানুয়ারী/2024

ভবিষ্যত চুক্তি ও স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন নিয়ে পড়াশুনা করার বিধান

প্রশ্ন: 241297

আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারের কিছু আর্থিক লেনদেন পড়া বা পড়নো কি জায়েয হবে, যেমন: ভবিষ্যত চুক্তি (Futures Contract)? উল্লেখ্য, আমি একটা বিষয়ের উপর পিএইচডির অভিসন্দর্ভ প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। সেটা হলো: খনিজ তেলের বাজারে আর্থিক ঝুঁকি থেকে কীভাবে বাঁচা যায়? সেটা ভবিষ্যত চুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে। আমার জন্য এটা করা কি জায়েয হবে? জানিয়ে রাখি, আমি পড়ালেখার শেষ বছরে আছি।

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর

এক:

ভবিষ্যত চুক্তিসহ অন্যান্য আর্থিক লেনদেন পড়তে কোনো সমস্যা নেই; যদিও সেগুলো হারাম হয়ে থাকে। তবে দুইটি শর্তে:

১। শিক্ষার্থীর এমন শরয়ী জ্ঞান থাকা যেটার মাধ্যমে সে হালাল ও হারাম চুক্তির মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে। এমনকি যদি নির্ভরযোগ্য আলেমকে জিজ্ঞাসা করেও সেটা সে করে থাকে; যাতে করে সে বাতিলের ধোঁকা ও প্রতারণায় না পড়ে।

২। আল্লাহ এই সব চুক্তির মাঝে যেগুলোকে হারাম করেছেন সেগুলোকে হারাম বলে বিশ্বাস করা। কারণ মন্দের প্রতি তুষ্ট থাকা ও মন্দকে স্বীকৃতি দেওয়া জায়েয নেই।

তার উচিত এই জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে এই নিয়ত করা যে, হারামকে জেনে হারাম থেকে দূরে থাকা এবং এর থেকে মানুষকে সতর্ক করা এবং মানুষের জন্য এমন বৈধ বিকল্পের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেটা তাদেরকে হারাম থেকে অমুখাপেক্ষী করে দিবে।

দেখুন: প্রশ্ন নং- (141894 )

দুই:

“এই বাজারে যে সব ভবিষ্যত চুক্তি হয় সেগুলোর অধিকাংশ প্রকৃত অর্থে বেচাকেনা নয়। কারণ এ সব চুক্তিতে চুক্তির দুই পক্ষের মধ্যে হস্তান্তর সম্পন্ন হয় না; যে সব ক্ষেত্রে শরিয়া বিনিময়কৃত বস্তুদ্বয়ের উভয়টির বা একটির হস্তান্তর সম্পন্ন হওয়ার শর্ত করে থাকে।

দ্বিতীয়ত: এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিক্রেতা এমন কিছু মুদ্রা, শেয়ার, ঋণপত্র কিংবা পণ্য বিক্রয় করে যেগুলো তার মালিকানায় নেই। কিন্তু সে আশা করে যে বাজার থেকে সে এটা কিনে যথাসময়ে ক্রেতাকে প্রদান করতে পারবে। কিন্তু সে চুক্তির সময় মূল্য হস্তগত করে না; যা ‘বাইয়ে সালাম’ হওয়ার জন্য শর্ত।

তৃতীয়ত: এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রেতা হস্তগত করার আগেই এমন কিছু বিক্রি করে যা সে অন্য কারো জন্য কিনেছিল। অন্যজন সেটাকে হস্তগত করার আগে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। এভাবে একই বস্তু হস্তগত করার আগে কেনাবেচা চলতে থাকে। ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তিটা শেষ ক্রেতার কাছে এসে সমাপ্ত হয়, যিনি প্রথম বিক্রেতার কাছ থেকে বিক্রীত বস্তু হস্তগত করতে চান; যে বিক্রেতা এমন পণ্য বিক্রি করেছে যেটা তার মালিকানাভুক্ত নয়। কিংবা হস্তান্তরের দিন তথা হিসাব-নিকাশ নিষ্পত্তির দিন তাকে মূল্যের পার্থক্য পরিশোধ করতে চায়। এ সময় প্রথম ও শেষ ক্রেতা-বিক্রেতা ছাড়া বাকিদের ভূমিকা হলো নির্ধারিত দিনে লাভ হলে দামের পার্থক্য হস্তগত করা; আর ক্ষতি হলে দামের পার্থক্য প্রদান করা; হুবহু জুয়াড়িদের মাঝে যা ঘটে থাকে।”

[শেয়ারবাজারে লেনদেন প্রসঙ্গে ইসলামী ফিকাহ একাডেমির সিদ্ধান্তের ভাষ্য থেকে উদ্ধৃতি সমাপ্ত]

পরিপূর্ণ ভাষ্য জানতে দেখুন (124311) নং প্রশ্নের উত্তর।

ইসলামী ফিকাহ একাডেমির অন্য একটি সিদ্ধান্তে এসেছে:

‘আন্তর্জাতিক বাজারগুলোতে এই লেনদেনের মাধ্যমে যে বাণিজ্য সম্পন্ন হয় তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শরিয়তে নিষিদ্ধ অনেক চুক্তি থাকে। তন্মধ্যে রয়েছে:

১. ঋণপত্র বাণিজ্য। এটা হারাম সুদের অন্তর্ভুক্ত। জেদ্দার ইসলামী ফিকহ একাডেমির ষষ্ঠ সেশনে ৬০ নং সিদ্ধান্তে এটা বলা হয়েছে।

২. কোনো বাছবিচার ছাড়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ব্যবসা করা। ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগের অধিভুক্ত ইসলামী ফিকহ একাডেমির ১৪১৫ হিজরী সনে অনুষ্ঠিত চতুর্দশ সেশনের চতুর্থ সিদ্ধান্তে বলা হয়: যে সকল কোম্পানির মূল উদ্দেশ্য হারাম কিংবা যেগুলোর কিছু লেনদেনে সুদ আছে সেগুলোর শেয়ার দিয়ে ব্যবসা করা হারাম।

৩.  অধিকাংশ ক্ষেত্রে শরয়ি হস্তান্তর ছাড়া মুদ্রা কেনাবেচা হয়, যে (শরয়ি) হস্তান্তর থাকলে লেনদেন বৈধতা পেত।

৪. বিকল্প চুক্তি (Options Contract) বা ভবিষ্যত চুক্তির (Futures Contract) মাধ্যমে ব্যবসা করা। জেদ্দাস্থ ইসলামী ফিকহ একাডেমির ষষ্ঠ সেশনের ৬৩ নং সিদ্ধান্তে বলা হয়: বিকল্প চুক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয। কারণ যেটার উপর চুক্তি করা হলো সেটা কোন সম্পদ, উপকার বা এমন কোনো আর্থিক অধিকার নয়; যার বিনিময় দেওয়া যায়। অনুরূপ কথা প্রযোজ্য ভবিষ্যত চুক্তি ও সূচক বাণিজ্য (Index Trading)-এর ক্ষেত্রেও।’

মোদ্দাকথা হল শেয়ার বাজারে প্রচলিত ভবিষ্যত চুক্তি ও অন্যান্য লেনদেন চুক্তিতে হারাম প্রবেশ করে। একজন শিক্ষার্থীর দায়িত্ব হল এর হুকুম জানা, অন্যকে জানানো; যাতে করে কেউ এর ধোঁকায় না পড়ে। সে এমন কিছু লিখবে না যা এ ধরনের লেনদেনের কাজে মানুষকে সাহায্য করে কিংবা এমন লেনদেন করতে তাদেরকে উৎসাহিত করে।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

answer

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ

টেক্সট ফরম্যাটিং অপশন

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android