48

মানবজাতির রাসূলগণের প্রয়োজনীয়তা

প্রশ্ন: 13957

মানুষদের জন্য নবীদের প্রয়োজনীয়তা কী?

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূলের প্রতি। পর সমাচার:

নবীরা হলেন আল্লাহর দূত। তারা বান্দাদের কাছে আল্লাহর নির্দেশাবলী পৌঁছে দেন। আল্লাহর আদেশ মেনে চললে তাদের জন্য যে নিয়ামত তিনি প্রস্তুত রেখেছেন তারা এর সুসংবাদ প্রদান করেন। আল্লাহর নিষেধ অমান্য করলে যে চিরন্তন শাস্তি রয়েছে তা থেকে সতর্ক করেন। বান্দাদের কাছে নবীরা পূর্ববর্তী জাতিসমূহের ঘটনাবলি বর্ণনা করেন। সেই জাতিগুলো তাদের রবের নির্দেশের অবাধ্য হওয়ায় যে সকল শাস্তির সম্মুখীন হয়েছিল সেগুলো তাদের কাছে তুলে ধরেন।

এই সমস্ত ঐশী আদেশ-নিষেধ মানুষের বিবেক-বুদ্ধি নিজে নিজে জানতে পারে না। তাই আল্লাহ শরয়ি আইন-কানুন প্রদান করেছেন এবং আদেশাবলী ও নিষেধাবলী আবশ্যক করে দিয়েছেন; যাতে তিনি মানুষকে সম্মানিত করতে পারেন এবং মানুষের কল্যাণ সংরক্ষণ করতে পারেন। কারণ হতে পারে লোকেরা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে হারামে লিপ্ত হয়ে যাবে এবং অন্যদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে তাদের অধিকার হরণ করবে। তাই আল্লাহর গভীর প্রজ্ঞা এই যে, তিনি সময়ে সময়ে কিছু রাসূল প্রেরণ করেছেন; যাতে করে তাঁরা তাদেরকে আল্লাহর আদেশের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং আল্লাহর অবাধ্য হওয়া থেকে তাদেরকে সতর্ক করেন। তারা বান্দাদের কাছে উপদেশসমূহ পাঠ করেন এবং পূর্ববর্তীদের ঘটনাবলি উল্লেখ করেন। কেননা বিস্ময়কর খবরাখবর যখন কানে পৌঁছে, অদ্ভূত ঘটনাবলি যখন অন্তরকে জাগিয়ে তোলে তখন মানুষের বিবেক-বুদ্ধি সেগুলোকে গ্রহণ করে। ফলে মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি পায় এবং অনুধাবন সঠিক হয়। যে মানুষ বেশি বেশি শোনে সে তত বেশি ভাবে। আর যে যত বেশি ভাবে সে তত বেশি চিন্তাশীল হয়। আর যে যত বেশি চিন্তাশীল হয় সে তত বেশি জ্ঞানী হয়। আর যে যত বেশি জ্ঞানী হয় সে তত বেশি আমল করে। সুতরাং রাসূলদের প্রেরণ করা ছাড়া গত্যন্তর নেই এবং সত্য প্রতিষ্ঠায় তাদের বিকল্প অনুপস্থিত।[আলী ইবনে মুহাম্মাদ আল-মাওয়ার্দী রচিত ‘আ’লামুন নুবুওয়াহ’ (পৃ. ৩৩)]

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা রাহিমাহুল্লাহ বলেন: (ইবনে তাইমিয়্যা নামে প্রসিদ্ধ আহমদ ইবনে আব্দুল হালীম ইবন আব্দুস সালামের জন্ম ৬৬১ হিজরীতে। তার মৃত্যু ৭২৮ হিজরী সনে। তিনি ইসলামের একজন বড় আলেম ছিলেন। যার রচিত বহু মূল্যবান গ্রন্থ রয়েছে।) “বান্দার ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের সংস্কারে রিসালাত জরুরী। রিসালাতের অনুসরণ ছাড়া যেমনিভাবে আখিরাতে তার কোনো কল্যাণ নেই, অনুরূপভাবে পার্থিব জীবনযাপনেও রিসালাতের অনুসরণ ছাড়া তার কোনো কল্যাণ নেই। মানুষ শরীয়ত অনুসরণ করতে বাধ্য। কারণ সে দুই ধরনের মাঝে যে কোনো এক ধরনের কাজ করে। হয় সে এমন কাজ করে যা তার উপকার করে, নতুবা এমন কিছু করে যা তার ক্ষতি করে। শরিয়ত হলো এমন আলো যা পরিস্কার করে দেয় কোনটি তার জন্য উপকারী, আর কোনটি তার জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং শরীয়ত হলো যমীনে আল্লাহর আলো এবং বান্দাদের মাঝে তার ইনসাফ। এটি আল্লাহর ঐ দুর্গ যাতে কেউ প্রবেশ করলে সে নিরাপদ হয়ে যায়।

শরীয়ত দ্বারা ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপকারী ও ক্ষতিকর বস্তু আলাদা করা উদ্দেশ্য নয়। কেননা এমনটি তো পশুরাও করতে পারে। গাধা, উটও তো যব আর ধুলাবালির মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। বরং শরীয়ত দ্বারা এমন কাজগুলোর মাঝে পার্থক্য করা উদ্দেশ্য যেগুলো বান্দার দুনিয়া ও আখিরাতে তার ক্ষতি করে কিংবা উপকার করে। এমন উপকারী কিছু কাজ হলো: ঈমান, তাওহীদ, ইনসাফ, সদাচরণ, বিশ্বস্ততা, চারিত্রিক পবিত্রতা, সাহসিকতা, জ্ঞান, ধৈর্য, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা, পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ, আত্মীয়দের সাথে সদাচরণ, হক আদায়, এক আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা, তাঁর উপর তাওয়াক্কুল করা, তাঁর কাছেই সাহায্য চাওয়া, তাঁর ফয়সালায় সন্তুষ্ট থাকা, তাঁর সিদ্ধান্তের কাছে সমর্পণ করা, তাঁকে সত্যায়ন করা এবং তার রাসূলগণ যা কিছু জানিয়েছে সেগুলোর সত্যায়ন করা ইত্যাদি আরো যত কিছু বান্দার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণকর ও উপকারী। এর বিপরীতে রয়েছে এমন সকল কিছু যা বান্দার দুনিয়া ও আখিরাতে দুর্ভাগ্য ও ক্ষতির কারণ।

রিসালাত না থাকলে জীবনের জন্য উপকারী ও ক্ষতিকর বিষয়গুলো বিস্তারিত জানা মানুষের আকলের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। বান্দাদের প্রতি আল্লাহর অন্যতম বড় নিয়ামত হলো তিনি তাদের কাছে তাঁর রাসূলদের প্রেরণ করেছেন, তাদের উপর তাঁর কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করেছেন এবং তাদের কাছে সীরাতে মুস্তাকীম তথা সরল-সঠিক পথ স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। যদি তিনি এমনটি না করতেন তাহলে তারা পশু কিংবা এর চেয়েও নিকৃষ্ট অবস্থায় থাকত। যে ব্যক্তি আল্লাহর রিসালাত গ্রহণ করে এবং এর উপর অটল থাকে সে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। আর যে তা প্রত্যাখ্যান করে এবং এর থেকে বেরিয়ে যায় সে নিকৃষ্ট সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। সে কুকুর, শুকর এবং সকল নিকৃষ্ট প্রাণী থেকেও নিকৃষ্ট। পৃথিবীবাসী টিকে থাকা তাদের মধ্যে রিসালাতের প্রভাবসমূহ বিদ্যমান থাকার উপর নির্ভরশীল। যখন পৃথিবী থেকে রাসূলদের অবদানসমূহ মুছে ফেলা হবে, তাদের হেদায়াতের আলামতগুলো বিলুপ্ত করা হবে তখন আল্লাহ ঊর্ধ্ব জগৎ ও নিম্ন জগৎ ধ্বংস করে দিবেন এবং কিয়ামত সংঘটিত করবেন।

পৃথিবীবাসীর রাসূলদের প্রয়োজন তাদের সূর্য, চাঁদ, বায়ু ও বৃষ্টির প্রতি তাদের প্রয়োজনের মতো নয়। নিজ জীবনের প্রতি মানুষের প্রয়োজনের অনুরূপও নয়। আলোর প্রতি চোখের প্রয়োজনের মতও নয়। খাবার-পানীয়ের প্রতি দেহের প্রয়োজনের মতও নয়। বরং মানুষের মনে যত কিছু উদিত হয় সে সব কিছুর চেয়েও এর প্রয়োজন অধিক তীব্র। রাসূলগণ হলেন আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ এবং তাঁর সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাদের কাছে দূত। রাসূলদের সর্বশেষ ব্যক্তি, তাদের সর্দার ও তাদের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত হচ্ছেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আল্লাহ তাকে জগতবাসীর জন্য রহমত, জান্নাতের পথচারীদের জন্য দলীল এবং সৃষ্টিকুলের জন্য প্রমাণ হিসেবে প্রেরণ করেছেন। তার আনুগত্য করা, তাকে ভালোবাসা, তাকে সম্মান করা ও তার অধিকার আদায় করা বান্দাদের উপর ফরয করে দিয়েছেন। তিনি সকল নবী-রাসূলের কাছ থেকে তার উপর ঈমান আনা ও তাকে অনুসরণ করার অঙ্গীকার গ্রহণ করেছেন এবং তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে সকল মুমিন তাদেরকে অনুসরণ করবে তাদের কাছ থেকেও অনুরূপ অঙ্গীকার গ্রহণ করার। তিনি তাকে কিয়ামতের পূর্বে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে, আল্লাহর অনুমতিতে তাঁর দিকে আহ্বানকারী এবং আলোকবর্তিকা হিসেবে পাঠিয়েছেন। তার মাধ্যমে রিসালাতের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন, বিভ্রান্তি থেকে সুপথ দেখিয়েছেন, অজ্ঞতা থেকে জ্ঞানের দিশা দিয়েছেন। তার রিসালাতের মাধ্যমে তিনি অন্ধ চোখ, বধির কান এবং আচ্ছাদিত অন্তরগুলো খুলে দিয়েছেন। অন্ধকার যমীন তার রিসালাতে আলোকিত হয়েছে। বিক্ষিপ্ত থাকার পর তার মাধ্যমে অন্তরগুলোর মাঝে পারস্পরিক সৌহার্দ্য তৈরি হয়েছে। তার মাধ্যমে আল্লাহ বক্র মতাদর্শকে সোজা করেছেন এবং শুভ্র সঠিক পথকে স্পষ্ট করেছেন। তিনি তার অন্তরকে প্রসন্ন করে দিয়েছেন এবং অন্তরের ভার অপসারণ করে দিয়েছেন। তিনি তার স্মরণকে উচ্চকিত করেছেন এবং তার নির্দেশের বিরোধিতকারী সবার জন্য তিনি লাঞ্ছনা রেখে দিয়েছেন। যে সময়টাতে রাসূলদের বিরতি চলছিল, কিতাবসমূহ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, আল্লাহর বাণীকে বিকৃত করা হয়েছিল, শরীয়তগুলো বদলে ফেলা হয়েছিল, প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজেদের অন্যায় মতের উপর নির্ভর করত, নিজেদের ভুল মতবাদ ও প্রবৃত্তি দিয়ে আল্লাহ ও মানুষদের মাঝে বিচার করত তখন আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেছেন। ফলে আল্লাহ তার মাধ্যমে সৃষ্টিকুলকে সুপথ দেখান, তার দ্বারা পথগুলোকে স্পষ্ট করেন এবং তাকে দিয়েই মানুষদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসেন। তার মাধ্যমে আল্লাহ সফল এবং পাপীদেরকে আলাদা করে দেন। যে তার আদর্শ অনুসরণ করেছে সে সুপথ গ্রহণ করেছে। আর যে তার পথ থেকে সরে গিয়েছে সে পথচ্যুত হয়েছে ও সীমালঙ্ঘন করেছে। তাই তার প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক এবং অনুরূপভাবে বর্ষিত হোক সকল নবী-রাসূলের প্রতি।”[শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যার ‘কাইদাতুন ফী উজূবিল ই’তিসামি বির-রিসালাহ’ (খ:১৯, পৃ. ৯৯-১০২) মাজমুউল ফাতাওয়া থেকে গৃহীত। আরো দেখা যেতে পারে: লাওয়ামেউল আনওয়ার আল-বাহিয়্যাহ এবং খ: ২, পৃ. ২১৬ ও ২৩৬]

রিসালাতের প্রতি মানুষের প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে আমরা যে পয়েন্টগুলোতে উল্লেখ করতে পারি:

১- মানুষ সৃষ্ট ও প্রতিপালিত প্রাণী। তাকে অবশ্যই নিজ স্রষ্টাকে জানতে হবে। তাকে জানতে হবে স্রষ্টা তার কাছে কী চান। আর কী জন্যই বা তাকে সৃষ্টি করেছেন। মানুষ নিজে নিজে সেটি জানতে পারে না। নবী-রাসূলদেরকে চেনা এবং তারা যে সমস্ত হেদায়াত ও আলো নিয়ে এসেছেন সেগুলোর মাধ্যমেই কেবল এটি জানা সম্ভব।

২- মানুষ শরীর ও আত্মার সমন্বয়ে সৃষ্ট। শরীরের খাদ্য হলো খাবার-পানীয়। আর আত্মার খাদ্য এমন কিছু যা স্রষ্টা নির্ধারণ করেছেন। আর তা হলো সঠিক দ্বীন ও নেক আমল। নবী-রাসূলরা সঠিক দ্বীন নিয়ে এসেছেন এবং নেক আমলের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।

৩- মানুষ সহজাতভাবে ধার্মিক। তাকে অবশ্যই কোনো না কোনো ধর্মের অনুসরণ করতে হবে। এই ধর্মকে অবশ্যই সঠিক হতে হবে। সঠিক ধর্মাবলম্বন কেবল নবী-রাসূলদের উপর ঈমান আনা ও তারা যা নিয়ে এসেছেন তার উপর ঈমান আনার মাধ্যমেই সম্ভব।

৪- মানুষের এমন পথ প্রয়োজন যা তাকে দুনিয়ায় আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখিরাতে তার জান্নাত ও সুখের নির্দেশনা দিবে। আর এগুলোর পথ কেবল নবী-রাসূলরাই দেখাতে পারেন।

৫- মানুষ দুর্বল প্রাণী। তাকে কেন্দ্র করে বহু শত্রু ওঁৎ পেতে থাকে। শয়তান তাকে বিভ্রান্ত করতে চায়। খারাপ সঙ্গীরা তার কাছে মন্দকে ভালো হিসেবে উপস্থাপন করে। তার মধ্যে রয়েছে এমন মন্দ আত্মা যা খারাপ কাজের নির্দেশ দেয়। সুতরাং তার এমন কিছু প্রয়োজন যার মাধ্যমে সে নিজেকে শত্রুদের চক্রান্ত থেকে রক্ষা করতে পারবে। নবী-রাসূলেরা সেই পথ দেখিয়ে দিয়েছেন এবং স্পষ্টরূপে তার বিবরণ দিয়েছেন।

৬- মানুষ স্বভাবতই সামাজিক জীব। মানুষের পারস্পরিক মেলামেশার জন্য অবশ্যই আইন প্রয়োজন; যাতে করে তাদের মধ্যকার বিষয়গুলো ন্যায়সঙ্গতভাবে পরিচালিত হয়। নতুবা তাদের জীবন বন-জঙ্গলের জীবনের অনুরূপ হবে। আর এ আইন এমন হওয়া আবশ্যক যেন কোনো প্রকার বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি ছাড়া প্রত্যেকে প্রাপকের অধিকার সংরক্ষণ করতে পারে। এমন পরিপূর্ণ আইন কেবল নবী-রাসূলরাই নিয়ে আসতে পারেন।

৭- মানুষের জন্য এমন কিছু প্রয়োজন যা তাকে আত্মিক প্রশান্তি ও মানসিক নিরাপত্তা দিবে, প্রকৃত সুখের উপায়-উপকরণের পথ দেখাবে। নবী-রাসূলগণ সেই পথ দেখান।

সূত্র

সূত্র

ড. মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম রচিত ‘আল-ইসলাম উসূলুহু ওয়া-মাবাদিউহু’ গ্রন্থ থেকে চয়নকৃত

at email

নিউজলেটার

ওয়েবসাইটের ইমেইল ভিত্তিক নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত পৌঁছতে ও ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করতে

download iosdownload android